কোন দেশের টাকার মান সবচেয়ে কম
বিশ্ব অর্থনীতির জগতে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মানের মধ্যে বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিভিন্ন কারণে কিছু দেশের মুদ্রার মান অত্যন্ত কম। এই ধরনের দেশের মুদ্রা সাধারণত দুর্বল অর্থনীতির প্রতিফলন এবং মুদ্রার মূল্য বৈশ্বিক মুদ্রার মানদণ্ডে অনেক নিচে থাকে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন কোন দেশের মুদ্রার মান সবচেয়ে কম এবং এর পেছনের কারণগুলো সম্পর্কে।
ইরানিয়ান রিয়াল (IRR)
ইরানের মুদ্রা রিয়াল, বিশ্বের সবচেয়ে কম মূল্যের মুদ্রাগুলোর মধ্যে একটি। দেশটির উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে তেল রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা, ইরানের অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রিয়ালের মান ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে কয়েক লক্ষ রিয়াল লেনদেন হয়।
আরো পড়ুন: নেদারল্যান্ডস এর টাকার মান কত
ভিয়েতনামী ডং (VND)
ভিয়েতনামের মুদ্রা ডং, মানের দিক থেকে নিম্ন স্তরে অবস্থান করছে। যদিও ভিয়েতনামের অর্থনীতি গত কয়েক দশকে দ্রুত বিকশিত হয়েছে, তবে, দেশের মুদ্রার মান এখনো খুবই কম। ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রার মান নিয়ন্ত্রণে এবং রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডং-এর মান কম রাখতে চায়। এর ফলে মুদ্রার মূল্যমান কম থাকে।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ড টাকার মান কত জানুন
ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়াহ (IDR)
ইন্দোনেশিয়ার মুদ্রা রুপিয়াহ, বিশ্বের কম মূল্যের মুদ্রাগুলোর একটি। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব এবং দুর্নীতির কারণে রুপিয়াহ এর মান কমে গেছে। ইন্দোনেশিয়া একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে তার অর্থনীতি স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে কিন্তু রুপিয়াহ এর মান এখনো কম রয়েছে।
সাও তোমে ও প্রিন্সিপের ডোবরা (STN)
সাও তোমে ও প্রিন্সিপে, একটি ছোট দ্বীপরাষ্ট্র, যার মুদ্রা ডোবরা, বিশ্বের অন্যতম নিম্ন মানের মুদ্রা। এই দেশের অর্থনীতি অনেকাংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল এবং অবকাঠামো উন্নয়নের অভাব রয়েছে। এই কারণে ডোবরার মান অত্যন্ত কম।
ভেনেজুয়েলার বলিভার (VES)
ভেনেজুয়েলার বলিভার বিশ্বে অন্যতম নিম্ন মানের মুদ্রা। দেশের অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বলিভারের মান ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে বলিভারের মান প্রায় শূন্যে পৌঁছেছে।
সমাপ্তি
মুদ্রার মান দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি রূপ। উপরের দেশগুলোর উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, মুদ্রার মান কমে যাওয়ার পেছনে মূলত অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যাগুলো জড়িত।
দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করে তালিকাভুক্ত দেশগুলো তাদের মুদ্রার মান বাড়াতে চেষ্টা করছে। মুদ্রার মান কম থাকলেও এসব দেশের মানুষেরা কঠোর পরিশ্রম করে তাদের জীবনমান উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।