এমপক্স (Monkeypox) কি

এমপক্স (Monkeypox) কি
এমপক্স (Monkeypox) কি সেই বিষয় সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। সুতরাং, আপনারা যারা এমপক্স (Mpox) সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তারা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

এমপক্স (Mpox) কি

এমপক্স (Mpox) হলো মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ। এটি মূলত একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা পশুদের মধ্যে সংক্রমিত হয় এবং মাঝে মাঝে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটে। মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলোর মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা, ক্লান্তি এবং ফুসকুড়ি হওয়া অন্যতম।


এমপক্স সাধারণত প্রাণীদের থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয় তবে, মানুষ থেকে মানুষেও সংক্রমিত হতে পারে। এটি মূলত সংক্রমিত ব্যক্তির দেহের তরল, আক্রান্ত ত্বক বা বস্ত্রাদির মাধ্যমে ছড়ায়।

এমপক্সের চিকিৎসা লক্ষণ নির্ভর এবং গুরুতর ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। এই রোগটি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

মাঙ্কিপক্স (Mpox) কতটা ভয়ংকর

মানব শরীরে এমপক্স সাধারণত কম গুরুতর হয় তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক হতে পারে। এমপক্সের সংক্রমণ সাধারণত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের লক্ষণ সৃষ্টি করে। তবে, কিছু মানুষের জন্য এটি বেশ বিপজ্জনক হতে পারে, বিশেষত যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল বা যারা আগে থেকেই স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। এমপক্স এর ভয়ংকর দিকগুলো নিচে প্রদান করা হলো;

১। ফুসকুড়ি এবং ত্বকের সমস্যা: এমপক্সের সবচেয়ে লক্ষণীয় দিক হলো ত্বকে ফুসকুড়ি এবং ফোস্কা হওয়া যা শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি অনেক সময় যন্ত্রণাদায়ক এবং সংক্রমিত হতে পারে।


২। জটিলতা:  কিছু ক্ষেত্রে, ফুসকুড়ি গুরুতর ত্বকের সংক্রমণ, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া এবং চোখের সংক্রমণ হতে পারে। এই ধরনের জটিলতা বিশেষত শিশু, বয়স্ক, এবং দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

৩। মৃত্যুর ঝুঁকি: যদিও এমপক্সে মৃত্যুর হার খুব বেশি নয় তবে, কিছু অঞ্চলে (বিশেষ করে আফ্রিকায়) এমপক্সের সংক্রমণের ফলে মৃত্যুর হার প্রায় ৩ থেকে ৪ শতাংশ।


৪। মানসিক প্রভাব: শরীরে দৃশ্যমান ফুসকুড়ি এবং ফোস্কা অনেক সময় মানসিক চাপ এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে যা রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কঠোর প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে, বেশিরভাগ মানুষ এমপক্স থেকে সুস্থ হয়ে ওঠে এবং এটি সাধারণত নিজে থেকেই সেরে যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চলা এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রধান উপায়।

এম পক্স থেকে বাঁচার উপায়

এম পক্স (Monkeypox) একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা প্রধানত পশু থেকে মানুষের মধ্যে এবং মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। এটি সাধারণত শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। এম পক্স থেকে বাঁচার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা উচিত;

১। সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন: এম পক্স আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসার চেষ্টা করুন।

২। হাত ধোয়া: নিয়মিত ভাবে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি পানি এবং সাবান না পাওয়া যায়, তাহলে এলকোহল-ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।


৩। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: আপনার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন না, যেমন তোয়ালে, বিছানার চাদর, কাপড়, ইত্যাদি।
 
৪। মাস্ক পরিধান: যদি আপনি এমন জায়গায় থাকেন যেখানে এম পক্সের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, তাহলে মাস্ক ব্যবহার করুন। এটি আপনার মুখ এবং নাককে সংক্রমণের থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

৫। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা রাখা: যদি কেউ এম পক্সে আক্রান্ত হয়, তাহলে তাকে অন্যদের থেকে আলাদা রাখুন যতক্ষণ না তার রোগ সেরে যায়। এই সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিসপত্র পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখুন।


৬। জনসমাগম এড়িয়ে চলা: এম পক্সের প্রাদুর্ভাবের সময় জনসমাগম থেকে দূরে থাকুন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

উপরের সতর্কতাগুলো মেনে চললে এম পক্সের সংক্রমণ থেকে নিজেকে এবং অন্যদের রক্ষা করা সম্ভব। যদি আপনি কোনো উপসর্গ লক্ষ্য করেন, যেমন: জ্বর, শরীরে ফুসকুড়ি বা ব্যথা, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

উপসংহার

এই আর্টিকেলে এমপক্স (Monkeypox) কি, মাঙ্কিপক্স (Mpox) কতটা ভয়ংকর, এম পক্স থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার আসেপাশের পরিচিত মানুষদের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করার মাধ্যমে তাদেরকে এমপক্স সম্পর্কে সতর্ক করতে পারেন।
এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন
পূর্বের আর্টিকেল দেখুন পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন
এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি
মন্তব্য করুন
comment url
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল জয়েন করুন