মঙ্গল পান্ডে কে ছিলেন

মঙ্গল পান্ডে কে ছিলেন

ভারতের ইতিহাসে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহ হিসেবে পরিচিত। এই বিদ্রোহের অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন মঙ্গল পান্ডে। তার সাহসী পদক্ষেপ ভারতীয়দের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করে এবং ভবিষ্যতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ রোপণ করে।

মঙ্গল পান্ডে কে ছিলেন

মঙ্গল পান্ডে ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৪তম বেঙ্গল নেটিভ ইনফ্যান্ট্রির (বিএনআই) একজন সিপাহী। তিনি ১৮২৭ সালের ১৯ জুলাই ভারতের উত্তর প্রদেশের বলিয়া জেলার নাগওয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈনিক হলেও, তার ভিতরে ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুন। তিনি ব্রিটিশদের দ্বারা ভারতীয়দের প্রতি অবিচার ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং স্বাধীনতার জন্য প্রথম অনুপ্রেরণা জাগান।

আরো পড়ুন: গোপাল কিভাবে বাংলার ক্ষমতা দখল করেন সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন

মঙ্গল পান্ডে স্মরণীয় কেন

মঙ্গল পান্ডেকে স্মরণ করা হয় তার অদম্য সাহস এবং সংগ্রামের জন্য। তিনি ১৮৫৭ সালে কোম্পানির সৈনিকদের জন্য নতুন ধরনের রাইফেলের কার্তুজের ব্যবহার নিয়ে বিদ্রোহের সূচনা করেন।

এই কার্তুজগুলো গরু ও শূকরের চর্বি দিয়ে তৈরি হওয়ায় তা হিন্দু ও মুসলিম সৈনিকদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। মঙ্গল পান্ডে এই অবমাননা মেনে নিতে না পেরে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

আরো পড়ুন: বিধবা বিবাহ আইন কে পাস করেন, হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন পাস হয় কতো সালে জানুন

মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে কোথায় মহা বিদ্রোহ শুরু হয়

১৮৫৭ সালের ২৯ মার্চ মঙ্গল পান্ডে ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্টে ব্রিটিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। সিপাহী মঙ্গল পান্ডে প্রথমে তার বাহিনীকে সংগঠিত করে ব্রিটিশদের উপর আক্রমণ করেন। এই ঘটনা সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা ঘটায়, যা ধীরে ধীরে সমগ্র উত্তর ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।

আরো পড়ুন: ফিজার যুদ্ধ কত বছর স্থায়ী ছিল, যুদ্ধ কোথায় সংঘটিত হয়, হারবুল ফিজার শব্দের অর্থ কী

কোথায় এবং কোন বছর মঙ্গল পান্ডে বিদ্রোহ করেছিল

মঙ্গল পান্ডে ১৮৫৭ সালের ২৯ মার্চ ব্যারাকপুরে বিদ্রোহ করেছিলেন। এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সামরিক বিদ্রোহ যেটি পরবর্তীতে বৃহত্তর সিপাহী বিদ্রোহে পরিণত হয়। তার এই সাহসিকতা ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা তাকে ব্রিটিশ শাসকদের শত্রুতে পরিণত করে এবং তার বিচার ও মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়।

আরো পড়ুন: ন্যাটো কেন গঠিত হয়, ন্যাটোর বর্তমান মহাসচিব কোন দেশের, ন্যাটোর বর্তমান সদস্য সংখ্যা

সিপাহী বিদ্রোহের দুজন নেতার নাম

১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে মঙ্গল পান্ডে ছাড়াও আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন যারা এই বিদ্রোহকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন হাবিলদার রজব আলী ও দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।

রজব আলী বিদ্রোহী বাহিনীতে সাহসিকতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ছিলেন দিল্লির সম্রাট, যিনি বিদ্রোহকে সমর্থন দিয়েছিলেন এবং এই বিদ্রোহকে সমগ্র উত্তর ভারতে প্রসার করেছিলেন।

আরো পড়ুন: দর্শন কিভাবে ধর্ম, জীবন, বিজ্ঞান এবং সাহিত্যের সাথে সম্পর্কিত সেই বিষয়গুলো দেখে নিন

উপসংহার

মঙ্গল পান্ডে ভারতীয় স্বাধীনতার জন্য প্রথম যে বিদ্রোহী সুর তোলেন এবং সেটি পরবর্তী কালে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য একটি ভিত্তি স্থাপন করে। তিনি ভারতীয়দের জন্য একজন প্রেরণাদায়ক নেতা হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার নেতৃত্ব, সাহসিকতা এবং দেশের প্রতি আত্মত্যাগ ভারতীয় ইতিহাসে চিরকাল উদাহরণ হিসেবে থেকে যাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন
পূর্বের আর্টিকেল দেখুন পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন
এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি
মন্তব্য করুন
comment url
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল জয়েন করুন