মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং সাশ্রয়ী খরচের কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য মালয়েশিয়া যায়।

তবে, মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার আগে স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। এই আর্টিকেলে মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ, যোগ্যতা, প্রসেসিং এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ মূলত শিক্ষার্থীর কোর্সের সময়সীমার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, এটি ৬ মাস থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য ভিসার মেয়াদ ২-৩ বছর, স্নাতক বা অনার্স কোর্সের জন্য ৩-৪ বছর এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ১-২ বছর পর্যন্ত হতে পারে। পিএইচডি বা গবেষণার ক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ ৩-৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।

কোর্স শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থী চাইলে ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে তবে, নতুন করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা কবে চালু হবে

মালয়েশিয়া সরকার সাধারণত সারা বছর স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন গ্রহণ করে। তবে, কোভিড-১৯ এর কারণে কিছু সময় ভিসার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বর্তমানে মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পুনরায় চালু হয়েছে।

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জানুয়ারি এবং সেপ্টেম্বর মাসে প্রধান সেশন শুরু হয়। এই সময়ে ভিসার আবেদন জমা দেওয়া উত্তম। স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত আপডেট জানার জন্য মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা

মালয়েশিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা পূরণ করতে হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতার মধ্যে ডিপ্লোমা বা স্নাতক কোর্সের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের ফলাফল থাকতে হবে। মাস্টার্স কোর্সের জন্য স্নাতক ডিগ্রি এবং পিএইচডি কোর্সের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রি আবশ্যক।

ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে IELTS বা TOEFL স্কোর প্রয়োজন হয়। IELTS-এ সাধারণত ৫.৫ থেকে ৬.৫ স্কোর গ্রহণযোগ্য। যারা পূর্বে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া সহজ হয়।

এছাড়াও, শিক্ষার্থীর আর্থিক অবস্থা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা স্পন্সরশিপ লেটার দেখানো প্রয়োজন। পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১৮ মাস থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং

স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথমে শিক্ষার্থীকে মালয়েশিয়ার অনুমোদিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে অফার লেটার সংগ্রহ করতে হবে। এরপর, EMGS (Education Malaysia Global Services) এর মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

ভিসার জন্য আবেদন করতে ছবি, পাসপোর্ট কপি এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। আবেদন সফল হলে ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে Visa Approval Letter (VAL) পাওয়া যায়। এরপর শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ায় প্রবেশের পর স্থানীয় ইমিগ্রেশন অফিস থেকে স্টুডেন্ট পাস সংগ্রহ করে।

মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ এবং চূড়ান্ত যাচাই সম্পন্ন করা হয়।

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা ইন্টারভিউ

স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে ইন্টারভিউ বাধ্যতামূলক হতে পারে। ইন্টারভিউতে শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করা হয়।

ইন্টারভিউ প্রস্তুতির জন্য আবেদনকৃত কোর্স এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকতে হবে। শিক্ষার্থীর ইংরেজি ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলার দক্ষতা দেখানো গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারভিউতে আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা এবং সঠিক তথ্য প্রদান আবশ্যক।

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা চেক

স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা EMGS-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই চেক করা যায়। আবেদন নাম্বার বা পাসপোর্ট নাম্বার ব্যবহার করে ভিসার স্ট্যাটাস দেখা সম্ভব।

সর্বশেষ কথা

মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিসার মেয়াদ, যোগ্যতা এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকলে এটি করা অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়।

মালয়েশিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা যেমন আন্তর্জাতিক মানের, তেমনি শিক্ষার্থীদের জন্য সাশ্রয়ী। সুতরাং, যারা মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি কার্যকর সহায়ক হবে।
এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন
পূর্বের আর্টিকেল দেখুন পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন
এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি
মন্তব্য করুন
comment url
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল জয়েন করুন