খুৎকাঠি প্রথা মানে কী | খুৎকাঠি প্রথা প্রচলিত ছিল যে সমাজে
খুৎকাঠি প্রথা মানে কী, খুৎকাঠি প্রথা প্রচলিত ছিল যে সমাজে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে তথ্য প্রদান করা হবে। সুতরাং, আপনারা যারা খুৎকাঠি প্রথা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তারা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
খুৎকাঠি প্রথা অর্থ কী
খুৎকাঠি বা কুন্তকট্টি হল একটি প্রাচীন ভূমি ব্যবস্থা, যা ভারতের আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানার ধারণা স্বীকৃত ছিল। অর্থাৎ, একটি নির্দিষ্ট জমি সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মিলিত মালিকানাধীন থাকত।
এই প্রথার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল সমান অংশীদারিত্ব। জমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে সামগ্রিক সম্প্রদায়ের কল্যাণকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। এটি মুন্ডাদের ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল, যা তাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।
খুৎকাঠি প্রথা প্রচলিত ছিল যে সমাজে
খুৎকাঠি প্রথা মূলত ভারতের ঝাড়খণ্ড অঞ্চলের মুন্ডা আদিবাসী সমাজে প্রচলিত ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে এই ভূমি ব্যবস্থাকে বাতিল করে ব্যক্তি মালিকানার ধারণা চালু করা হয়। এর ফলে মুন্ডাদের জমিগুলো বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার এবং মহাজনদের হাতে চলে যায়।
এই জমি হারানোর ঘটনা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়। জমির অধিকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯০৮ সালে ব্রিটিশ সরকার ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করে মুন্ডাদের ঐতিহ্যবাহী খুৎকাঠি প্রথা ফিরিয়ে আনে।
উপসংহার
খুৎকাঠি প্রথা শুধু একটি ভূমি ব্যবস্থা ছিল না, এটি মুন্ডা সম্প্রদায়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। ব্রিটিশ শাসনের কারণে এই প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলেও পরবর্তীতে এটি আইনি স্বীকৃতি পেয়ে পুনরুদ্ধার হয়। মুন্ডাদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম আজও ঐতিহ্যগত অধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্মরণীয়।